শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪০ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নটি মিয়ানমার সীমান্ত ঘেঁষেই। সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের এলাকাটিকে স্থানীয়রা ঢেঁকিবনিয়া বলে জানলেও ওই এলাকার ভিন্ন একটি নাম রয়েছে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর কাছে।
ওই সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জান্তা বাহিনী ও স্বাধীনতাগামি ‘আরাকান আর্মি’র তীব্র যুদ্ধ শুরু হয় ফেব্রæয়ারির প্রথম দিন থেকে। যা তীব্র আকারে চলমান ছিল টানা ১২ দিনের বেশি। এরপর থেকে বিচ্ছিন্নভাবে গোলাগুলি হলেও পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে ২৫ ফেব্রæয়ারি থেকে।
সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দা জানিয়েছেন, সংঘর্ষে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি সদস্যদের তাড়িয়ে ঢেঁকিবনিয়ার সীমান্ত ফাঁড়ি বা চৌকি গুলো আরাকার আর্মির দখলে রয়েছে। যেখানে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে এসব যোদ্ধা। ওখানে বর্তমানে আরও শক্তি বাড়িয়ে দিয়েছে। বর্তমানে যেখানে নতুন করে চৌকি তৈরি, বাঙ্কার তৈরি করা হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে নারী সদস্য সহ যানবাহনের আনাগোনাও। একই সঙ্গে নতুন সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিতেও দেখা যাচ্ছে। সীমান্ত বাসির ধারণা, আরাকান আর্মির সদস্যরা নতুন করে নিজস্ব পুলিশ ও সীমান্ত বাহিনী তৈরি করতে প্রশিক্ষণ শুরু করেছে।
ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপাইতলী এলাকাটি সীমান্তের একেবারে লাগোয়া। ওই এলাকার কাটা তারের বেড়ার ওপারে সড়কটি ঘেঁষে রয়েছে পাহাড়। বুধবার সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত ঢেকিবানিয়ার ওই পয়েন্টের ৩ টি পাহাড়ে দেখা মিলেছে আরাকান আর্মির সদস্যদের তৎপরতা। এই ঘন্টায় কমপক্ষে ৫-৭ বার দুইটি সাদা রঙের মাইক্রোবাস ওই এলাকায় আসা যাওয়া করেছে। এসময় পাহাড়ের চ‚ড়ায় দেখা মিলেছে কয়েকজন নারী সদস্যও। কারও শরীরে সবুজ, আবার কারও শরীরে লাল রঙে পোষাক পরিহিত ছিলেন এরা। আবার অনেকেই স্বাভাবিক পোষাকেও অবস্থান করছিলেন যেখানে। ওই সময় কিছু নিমার্ণ সামগ্রী এনে মজুদ এবং পরে পাহাড়ের উপরে নিয়ে যেতেও দেখা যায়। এসময় পাহাড়ে টিনের তৈরি চৌকির কাছ থেকে ধোঁয়া উড়তেও দেখা গেছে। স্থানীয়রা বলেছেন, তাদের রান্না-বান্নার কাজের আগুনের ধোঁয়া তা।
জলপাইতলী এলাকার যুবক মনির আলম জানান, কয়েকদিন ধরে ওপারে তাদের তৎপরতা বেড়েছে। আগে গাড়ি দেখা না গেলেও এখন গাড়ির আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। পাহাড়ে নতুন চৌকি তৈরি, বাঙ্কারও তৈরি করছেন বলে মনে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা চাকুরিজীবী শামসুল আলম চৌধুরী জানান, কাটা তারের ওপারে নারী সদস্য, গাড়ি চলাচল, বাঙ্কার তৈরি করে নিজেদের অবস্থান শক্ত করছেন তারা (আরাকান আর্মি)।
মো. শামসুল নামের অপর এক বাসিন্দা জানান, গত কয়েকদিন ওপারে তাদের সংখ্যা কয়েকগুন বেড়েছে।
ক্যাম্প পাড়ার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম জানান, এখন পরিস্থিতি এখন শান্ত। তবে রাতে বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটা গুলির শব্দ শোনা যায়। যতটুকু খবর পাওয়া যাচ্ছে যেখানে পাহাড়ে নতুন সদস্য এনে জড়ো করা হয়েছে। এদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে আরাকান আর্মির নিজস্ব পুলিশ বাহিনী এবং সীমান্ত বাহিনী তৈরির প্রশিক্ষণ চলছে। যেখানে পাহাড়ে-পাহাড়ে বাঙ্কার তৈরি খবরও পাওয়া যাচ্ছে।
তুমব্রæর বাসিন্দা ফরিদুল আলম বলেন, মিয়ানমারের তুমব্রæ রাইট বিওপিতে আরকার আর্মি সদস্যদের ঘুরাফেরা আমরা দেখতে পাই। তবে তারা সংখ্যায় আগের তুলনায় বেড়েছে।
বান্দরবানের ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, সীমান্তের ওপারে আরাকান আর্মি তাদের নিজেদের মতই রয়েছেন। নিজের কাজ করছেন। মাঝে-মধ্যে দুই-এক গুলি আওয়াজ শোনা যায়। ওটা অনেকটা তাদের নিজস্ব অবস্থান আছে এটা জানান দেয়া। ওখানে চৌকি তৈরি সহ অন্যান্য বিষয় গুলি তাদের মতই করছেন।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply